বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণচেষ্টার ঘটনার ৯ দিন পর নেওয়া হয় মামলা। এরপর ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ। সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর (বৃহাস্পতিবার) ঝালকাঠির কাঠারিয়া উপজেলার আমুয়ার চালিতাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা ইসলাম (মিলা) শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে অটোবাইকে যোগে পাশর্^বর্তী মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী গ্রামের বাড়ি ফিরছিল। এসময় অটো চালক আরিফ হোসেন সরদার ও তার সহযোগী মো. রাকিব দুজন মিলে ধর্ষনের উদ্দ্যেশে অপহরণের চেষ্টা করে।
মেয়েটি প্রতিবাদ করলে গাড়ির গতি দ্রæত করে মেয়েটিকে নিয়ে তার (মিলা) বাড়ি অতিক্রম করে প্রয় ১ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মেয়েটি ডাক চিৎকার দিয়ে কেউ এগিয়ে না আসলে অপহরণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে এক পর্যায়ে মেয়েটি অটোবাইক লাফিয়ে রাস্তায় পড়ে। এতে তার হাত ভেঙে যায় এবং মুখমÐলে গুরুতর জখম হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় পরপরই মেয়েটির পরিবার ঘটনাস্থল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানায় একাধিকবার যোগাযোগ করলে থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে থানায় আইনি সেবা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সাধারন মানুষ এবং সচেতন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরপর দ্বায় এড়াতে ঘটনার ৯দিন পর গত শনিবার (২২ অক্টোবর) মেয়ের মা মারজিয়া ইসলামের দেওয়া মামলাটি গ্রহন করে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। তবে মামলা হওয়ার ৬ দিন পার হয়ে গেলেও রহাস্যজনক কারণে অদ্যাবধি কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি তারা। অভিযুক্তরা হলো-মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী গ্রামের মোঃ সোবাহান সরদারের ছেলে মোঃ আরিফ সরদার (অটোচালক) ও একই গ্রামের মোঃ খোকনের ছেলে মোঃ রাকীব (আরিফ সরদারের সহযোগী)।
এদিকে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে না পাড়ায় ক্ষুব্ধ হয় নির্যাতিত ছাত্রী ফারজানা ইসলাম মিলার সহপাঠীরা ও এলাকাবাসী। তাই তারা দোষীদের দ্রæত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মানববন্ধন করছে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়ায় বামনা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে ঘন্টা ব্যাপি বিক্ষোভ করে আমুয়া চালিতাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে আশপাশের একাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শতাধিক শিক্ষার্থীর পাশি-পাশি মানবন্ধনে অংশ নেয় শিক্ষক-শিক্ষিকা, ব্যবসায়ী, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সমাজসেবীরা।
পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তারা সুষ্ঠু ও ন্যয় বিচার পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছেন। তবে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ বলছে আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অতিদ্রæত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠানো হবে।